গ্যাসের অভাবে বন্ধ ৪ ইউরিয়া কারখানা, সার আমদানির উদ্যোগ

মো. নজরুল ইসলাম
মো. নজরুল ইসলাম
23 September 2024, 05:26 AM
UPDATED 23 September 2024, 12:30 PM

গ্যাস সংকটের কারণে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচটি ইউরিয়া কারখানার মধ্যে চারটি বন্ধ হয়ে গেছে। কারখানাগুলোতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চলতি আমন ও আসন্ন বোরো মৌসুমে ইউরিয়া সারের সংকট দেখা দিতে পারে।

দেশে আমন ও বোরো মৌসুমে প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া প্রয়োজন হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে দেশে ইউরিয়ার মজুদ আছে প্রায় পাঁচ লাখ টন যা দিয়ে দুই মাসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ইউরিয়ার সরবরাহ না থাকলে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ সংকট তৈরি হতে পারে।

মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনালের একটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশে ইউরিয়া উৎপাদনে ধাক্কা লাগে। বন্ধ হয়ে যাওয়া টার্মিনালটি থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। সম্প্রতি টার্মিনালটি মেরামতের কাজ শেষ হলেও এখনো গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়নি।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) শফিউল আজম বলেন, এলএনজি না থাকায় চট্টগ্রামে সার কারখানার জন্য পেট্রোবাংলা থেকে ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বরাদ্দ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রামে অবস্থিত জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগের কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানিকে (কাফকো)।

গত ১১ সেপ্টেম্বর শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি গ্যাসের অভাবে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচটি কারখানার মধ্যে শুধু ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার জাতীয় গ্রিড থেকে প্রয়োজনীয় গ্যাস পাচ্ছে।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানিতে জানুয়ারি থেকে এবং চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার (সিইউএফএল) ও যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানির উৎপাদন ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে।

সরকারি সিদ্ধান্তে সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিআইসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইদুর রহমান।

তিনি বলেন, 'ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ইউরিয়া সারের ব্যাপক চাহিদা থাকে। তাই আমরা প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে সার আমদানির পরিকল্পনা করেছি। কিন্তু ব্যাংকে ডলারের ঘাটতির কারণে আমরা এলসি খুলতে হিমশিম খাচ্ছি।'

গত ১ সেপ্টেম্বর প্রায় সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া আমদানির জন্য সোনালী ব্যাংকের কাছে ঋণপত্র খুলতে চেয়েছিল বিসিআইসি।

এরপর গত ১৮ সেপ্টেম্বর সৌদি আরব ও কাতার থেকে ২৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ হাজার টন বাল্ক দানাদার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয় উপদেষ্টা কমিটি।

সাইদুর রহমান বলেন, 'সব সার কারখানা চালু থাকলে এই মুহূর্তে কোনো আমদানির প্রয়োজন হতো না।'

সরকারি মালিকানাধীন পাঁচটি কারখানা বার্ষিক প্রায় ৩২ লাখ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে ২০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করতে পারে।

(সংক্ষেপিত অনুবাদ, বিস্তারিত পড়টে ক্লিক করুন এই লিংকে)