হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
15 January 2024, 08:32 AM
UPDATED 15 January 2024, 15:55 PM

উত্তর কোরিয়া গতকাল একটি মধ্যম পাল্লার সলিড-ফুয়েল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। এই উদ্যোগের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান।

আজ সোমবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ'র বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী এই পরীক্ষার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে দেশটি দাবি করে, উত্তর কোরিয়ার এই উদ্যোগ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সনদের লঙ্ঘন এবং উত্তর কোরিয়ার যেকোনো উসকানির 'উপযুক্ত জবাব' দেওয়া হবে।

রবিবারের এই ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘটনায় আরও নিন্দা জানিয়েছে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ক প্রতিনিধিরা এক ত্রিমুখী ফোন কলে অংশ নেন এবং পরবর্তীতে জানান, এই অঞ্চলে অস্থিরতার মূল কারণ উত্তর কোরিয়ার উসকানিমূলক আচরণ।

একই দিন রাজধানী পিয়ংইয়ং ছেড়ে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চোই সন হুইর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল।

Najmul Hossain Shanto & Yasir Ali Chowdhury
সেপ্টেম্বরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করেন কিম জং উন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও রাশিয়া সফরের ঘটনায় উত্তর ও কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কে অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা স্যাটেলাইট কক্ষপথে পাঠানোর পরিকল্পনা ও পিয়ংইয়ং এবং মস্কোর মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

আজ সোমবার কেসিএনএতে প্রকাশিত ভিন্ন এক প্রতিবেদন মতে, উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এ অঞ্চলে সামরিক মহড়া চালিয়ে অস্থিরতা বাড়িয়েছে সিউল। এ ছাড়া, সিউলের কর্মকর্তাদের 'অস্ত্র ধারণের' আহবানের কথাও উল্লেখ করে পিয়ংইয়ং।

প্রতিবেদনে বলা হয়, 'এমন কী ছোট একটি স্ফুলিঙ্গও একে অপরের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন এই দুই দেশের মাঝে বড় আকারে সরাসরি সংঘাতের অনুঘটক হতে পারে'।

উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া প্রসঙ্গে আদের এক দশকেরও পুরনো পররাষ্ট্রনীতি পাল্টেছে। উত্তর কোরিয়ার ভাষায়, দক্ষিণ কোরিয়া এখন একটি 'শত্রু দেশ'। দেশটির নেতা কিম জং উন জানান, দুই কোরিয়ার শান্তিপূর্ণ একীভূতকরণ আর কখনোই সম্ভব হবে না।

বিশ্লেষকদের মতে, সিউলের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনো যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের স্বপক্ষে যুক্তি দিতে এই নীতি কাজে আসতে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, রোববারের ক্ষেপণাস্ত্রটি পিয়ংইয়ংয়ের স্থানীয় স্থানীয় সময় দুপুর ২টা বেজে ৫৫ মিনিটে নিক্ষেপ করা হয়। প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পেরিয়ে এটি দেশটির পূর্ব উপকূলে সমুদ্রে আঘাত করে। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল অন্তত ৫০ কিলোমিটার।

liton.jpeg
ডিসেম্বরে আন্তমহাদেশী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করছেন কিম জং উন। ফাইল ছবি: এএফপি

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রে সাধারণত একটি ওয়ারহেড থাকে, যেটি শব্দের গতির চেয়ে পাঁচগুণ বেশি দ্রুত উড়তে পারে, অর্থাৎ, ঘণ্টায় প্রায় ছয় হাজার ২০০ কিলোমিটার।

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র অত্যন্ত কম উচ্চতায় উড়তে পারে এবং চলার পথে একাধিকবার গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে, যার ফলে সহজেই প্রথাগত রাডারকে ফাঁকি দিতে পারে এটি।