হংকংয়ে আগুনে নিহত বেড়ে ১২৮, নিখোঁজ ২০০
হংকংয়ে একটি আবাসিক এলাকায় কয়েকটি বহুতল ভবনে আগুনে নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৮ জনে। জীবিতদের খুঁজে বের করার অভিযান শেষ হয়েছে। রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
হংকংয়ের নিরাপত্তা প্রধান ক্রিস ট্যাং জানান, জীবিতদের অনুসন্ধান অভিযান শেষ হয়েছে। এখনো প্রায় ২০০ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। অন্তত ৭৯ জন আহত হয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানান, ফ্ল্যাটগুলোর জানালার বাইরে থাকা স্টাইরোফোমের কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। নিহতদের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। সব তথ্য সংগ্রহের পর নিহতদের বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।
২০২৪ সালের জুলাই থেকে ওই আবাসিক এলাকার বহুতল ভবনগুলোতে সংস্কার কাজ চলছিল। আগুন লাগার সময় প্রতিটি ভবনের বাইরের দিকে বাঁশের মাচা ও সবুজ জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল।
বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ২টা ৫১ মিনিটে কমপ্লেক্সের ওয়াং চিয়ং হাউসে আগুনের সূত্রপাত হয়। আজ শুক্রবার সকালেও আগুন জ্বলতে দেখা যায়। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে আগুনটি 'প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে' বলে কর্তৃপক্ষ বিবিসিকে জানায়।
ত্রুটিপূর্ণ অগ্নি-সতর্কতা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে শ্রমিকদের সিগারেট খাওয়া—অনেক বাসিন্দা এসব ঝুঁকির সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
আশ্রয়কেন্দ্রে জড়ো হয়ে তাদের কেউ কেউ অভিযোগ করেন, অবহেলা ও খরচ কমানোর প্রবণতাই এই আগুনের কারণ। অনলাইনেও অনেকের মন্তব্যে এমনটা বলা হয়েছে।
হংকংয়ে প্রতিবাদ বেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হলেও বিভিন্ন অনলাইন ফোরাম এখনো খোলা আছে এবং সেখানেই জনমতের প্রথম প্রতিক্রিয়া স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়।
বিশ্লেষকদের মতে, জনগণের ক্ষোভ ও উদ্বেগ শুধু নির্মাণ কোম্পানিগুলোর দিকে নয়, সরকারের অগ্নি-নিরাপত্তা ও ভবন নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দিকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা জানতে প্রকাশ্য তদন্তের জন্য চাপ বাড়বে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, আজ থেকেই পুলিশ ভবনগুলোতে ঢুকে প্রমাণ সংগ্রহ শুরু করবে। আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহ ধরে তদন্ত চলবে।
তারা জানায়, আটটি ভবনের সবগুলোতেই ফায়ার অ্যালার্ম পরীক্ষায় দেখা গেছে—কোনোটিই ঠিকভাবে কাজ করছিল না।
তারা আরও জানায়, আগুন নেভাতে ৩৯১টি ফায়ার ইঞ্জিন মোতায়েন করা হয়। মোট ২,৩১১ জন অগ্নিনির্বাপণকর্মী অভিযানে অংশ নেন, তাদের মধ্যে ১২ জন আহত হয়েছেন। এই আগুনের ঘটনায় মোট ১৮৮টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছিল।