জোহরান মামদানি দেখা করতে চান, জানালেন ট্রাম্প

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
17 November 2025, 09:29 AM
UPDATED 17 November 2025, 15:50 PM

একজন দেশের প্রেসিডেন্ট। অপরজন সে দেশেরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরের নবনির্বাচিত মেয়র। একজনের বিষয়ে আরেকজনের মুখ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক কথা শোনা যায়নি। তা সত্ত্বেও, দেশের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে তারা 'কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার' সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ডেমোক্র্যাট নেতা ও নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক 'সাপে-নেউলে' হলেও পশ্চিমা সভ্যতা-ভব্যতার মানদণ্ড তাদেরকে এ ধরনের উদ্যোগ নিতে বাধ্য করেছে।

গত রোববার ফ্লোরিডায় সাপ্তাহিক ছুটি কাটানোর পর ওয়াশিংটনে ফিরে যাওয়ার আগে ট্রাম্প গণমাধ্যমকে বলেন, 'নিউইয়র্কের মেয়র আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাব।'

Trump
ফ্লোরিডায় ছুটি কাটিয়ে ওয়াশিংটন ফিরছেন ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট পরবর্তীতে বিষয়টি স্পষ্ট করে জানান, ট্রাম্প মামদানির কথাই বলছিলেন। তবে এখনো এ ধরনের কোনো বৈঠকের দিন-তারিখ চূড়ান্ত হয়নি।

ট্রাম্প আরও বলেন, 'আমরা চাই নিউইয়র্কের সব কাজ ঠিক মতো চলুক।'

ট্রাম্পের বক্তব্যের পর তাৎক্ষণিকভাবে মামদানির প্রতিনিধিরা কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে তার এক মুখপাত্র গত সপ্তাহে মামদানির দেওয়া বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেন। সেদিন মামদানি বলেছিলেন তিনি হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। কারণ 'নিউইয়র্কের উন্নয়ন ও সাফল্য নিশ্চিতে এই সম্পর্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ'।

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে ঘিরে গত কয়েক মাস ধরে জোহরান মামদানির কড়া সমালোচনা করে আসছেন ট্রাম্প। তিনি তাকে 'কমিউনিস্ট' বলে গালি দিয়ে বলেন যে, মামদানি জিতলে নিউইয়র্ক 'ধ্বংস' হবে।

উগান্ডায় জন্ম নেওয়া মার্কিন নাগরিক মামদানিকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেন ট্রাম্প। পাশাপাশি, নিউইয়র্ক থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিতেও পিছপা হননি সাবেক আবাসন ব্যবসায়ী ট্রাম্প।

প্রায় বছর খানেক আগেও জোহরান মামদানির নাম তেমন কেউ জানতেন না। নিউইয়র্কের কুইনসের প্রতিনিধি হিসেবে স্থানীয় পরিষদের ১৫০ জনের একজন সদস্য ছিলেন তিনি। ডেমোক্র্যাট পার্টির 'নিরাপদ এলাকায়' তিনি আইনপ্রণেতা হিসেবে তেমন কোনো বড় ইস্যু উত্থাপন করেননি বা তাকে তেমন কোনো চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে হয়নি।

কিন্তু, হঠাৎ করেই যেন জোহরান মামদানি (৩৪) নিউইয়র্কবাসীর 'চোখের মণি' হয়ে ওঠেন।

তিনি নিউইয়র্কে জনবান্ধব নীতিমালা চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে যান। তার এসব বার্তা ট্রাম্পের আগ্রাসী, অভিবাসনবিরোধী নীতির সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক ছিল।

Mamdani
ব্রুকলিনে শিশুদের স্কুল পরিদর্শন করছেন নিউইয়র্কের মেয়র মামদানি। ছবি: এএফপি

জোহরান মামদানি শুধু ডেমোক্র্যাটদের নয়, সকল স্তরের নিউইয়র্কবাসীর ভোট পান। ফলে, ট্রাম্পের আশীর্বাদ পেয়েও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুয়োমো তার কাছে পাত্তা পাননি।

নির্বাচনে জেতার পর মামদানি বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও গোটা বিশ্বকে দেখিয়েছেন কীভাবে ট্রাম্পকে হারাতে হয়। এরপর তিনি নিউইয়র্ককে 'ট্রাম্প থেকে সুরক্ষিত' রাখার ঘোষণা দেন।

তবে নতুন মেয়র পরবর্তীতে জানান, তিনি নিউইয়র্কবাসীর মঙ্গলের জন্য ট্রাম্পসহ যে কারো সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।