চীনে মোদিকে লাল গালিচা, গলবে বরফ?

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
30 August 2025, 12:13 PM
UPDATED 30 August 2025, 18:18 PM

হায়, সেলুকাস! যে দেশকে 'পরম বন্ধু' হিসেবে কাছে টেনে নেওয়া হয়েছিল, তার কাছে 'দাগা' খেয়ে এখন সেই দেশের পথে পা বাড়ালেন নরেন্দ্র মোদি যে দেশকে এক সময় 'চরম শত্রু' হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল। সেটি দূরের কোনো দেশ নয়, প্রতিবেশী চীন। প্রায় সাত বছর পর সেই দেশে যাওয়ার উদ্দেশ্য, শুধু পিঠ নয়, পেটও বাঁচানো।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়া থেকে তেল কেনার শাস্তি হিসেবে ভারতের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করায় বন্ধু নরেন্দ্র মোদির 'মুখ' পোড়ে। সেই পোড়া মুখে 'প্রলেপ' দিতেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে ছুটতে হচ্ছে 'শত্রু' চীনের পথে। ভাগ্যের পরিহাস, যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু চীনকে এখন নিজের বন্ধু ভাবতে শুরু করছে ভারত। আবারও যেন প্রায় সাত দশক পুরোনো 'হিন্দি-চীনী ভাই ভাই' স্লোগান উঠতে যাচ্ছে নয়াদিল্লিতে।

বিশ্ববাসী জানে এই চীনকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এশীয়-প্রশান্ত অঞ্চলে চার দেশের জোটে যোগ দেয় ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সেই জোটে আছে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত। সেই ঘটনাকে ধামা চাপা দিয়ে ভারতকে হাত বাড়াতে হচ্ছে চীনের দিকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, চীনের ওপরও নাখোশ যুক্তরাষ্ট্র। সেই সুযোগেই যেন বেইজিংয়ের কাছে আসতে চাচ্ছে নয়াদিল্লি।

জোট সদস্য অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নূন্যতম ১০ শতাংশ। গত ৯ এপ্রিল তা কার্যকর হয়।

জাপানের রপ্তানি পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক ১৫ শতাংশ। এ ছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রে জাপানকে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। গত ২২ জুলাই এসবের বিনিময়ে টোকিওর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করে ওয়াশিংটন ডিসি।

আর ভারতের ওপর শুল্ক পড়েছে ৫০ শতাংশ।

আজ শনিবার ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের তিয়ানজিন শহরে আগামীকাল সোমবার শুরু হতে যাওয়া দুই দিনের সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে চীনে পৌঁছেছেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে ১০ সদস্যের জোটের সম্মেলনে যোগ দিয়ে ভারত বর্তমান বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করবেন। তাই এই সম্মেলন সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আজ এক এক্স পোস্টে মোদি লিখেছেন, 'চীনের তিয়ানজিন শহরে পৌঁছেছি। এসসিও সম্মেলনের ফল ও কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় আছি।'

প্রায় ৭ বছর পর চীনে এলেন মোদি। দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী দুই দিনের জাপান সফরে দেশটির সঙ্গে ১৩টি চুক্তি করেছেন।

সেসময় এক্স-এ নরেন্দ্র মোদি লিখেছিলেন, জাপানে তার সফর দুই জাতির জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এখন দেখার বিষয়, মোদির চীন সফরে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে কিনা। অর্থাৎ, ৭ বছরের জমা বরফ গলে কিনা।