পাকিস্তানে সীমিত করা হচ্ছে ভিপিএনের ব্যবহার

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
2 August 2024, 09:54 AM
UPDATED 2 August 2024, 16:08 PM

পাকিস্তানের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (পিটিএ) দেশটিতে ভিপিএনের (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) ব্যবহার সীমিত করার উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।

আজ শুক্রবার পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন এই তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের একটি পার্লামেন্টারি কমিটির বৈঠকে পিটিএ জানিয়েছে, এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কিছু ভিপিএন হোয়াইটলিস্ট বা সাদা তালিকাভুক্ত করা হবে এবং বাকিগুলো ব্লক করে দেওয়া হবে।

মন্ত্রিসভার সচিবালয় সংক্রান্ত পার্লামেন্টারি স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকে পিটিএ চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) হাফিজুর রেহমান জানান, এই নীতিমালা বাস্তবায়নের পর পাকিস্তানে শুধু সরকারি হোয়াইটলিস্টে থাকা ভিপিএনগুলো কাজ করবে।

২০২৪ সালে স্থানীয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভিপিএনের ব্যবহার বড় আকারে বেড়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটিতে এক্স (সাবেক টুইটার) বন্ধ থাকায় নেটিজেনরা ভিপিএনের মাধ্যমে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন।

নিরপেক্ষ ভিপিএন রিভিউ ওয়েবসাইট টপটেনভিপিএনের দেওয়া প্রতিবেদন মতে, এক্স ব্লক করার দুই দিন পর পাকিস্তানে প্রক্সি নেটওয়ার্ক বা ভিপিএনের চাহিদা ১৩১ শতাংশ বেড়ে যায়।

ভিপিএন সেবাদাতা সার্ফশার্ক জানিয়েছে, পাকিস্তানে এক্স ব্লক করার পর দেশটিতে ৩০০ থেকে ৪০০ শতাংশ গ্রাহক বেড়েছে।

ভিপিএনের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষ এক্স ব্যবহার করতে সক্ষম হওয়ায় ব্লকের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।

তবে পিটিএ প্রধান সিনেটের কমিটিকে জানান, ব্লকের পর পাকিস্তানে এক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭০ শতাংশ কমেছে।

বাকি ৩০ শতাংশ ব্যবহারকারী ভিপিএনের মাধ্যমে এক্স ব্যবহার করছেন বলে জানান রেহমান।

অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তুলনায় পাকিস্তানে এক্সের ব্যবহারকারী বেশ কম। ডাটারিপোর্টালের মতে, ২০২৪ সালের শুরুতে দেশটিতে মাত্র ৪৫ লাখ মানুষ এক্স ব্যবহার করতেন।

Bangladesh women cricket Team
ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

এক প্রশ্নের জবাবে পিটিএ প্রধান বলেন, সব ধরনের ভিপিএন ব্লক করা হলে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে।

'অসংখ্য ভিপিএন-নির্ভর আইটি ব্যবসা ধসে পড়বে', যোগ করেন তিনি।

পাকিস্তান সরকার এর আগেও ভিপিএনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়েছে। তবে সবগুলো উদ্যোগই ব্যর্থ হয়।

২০২২ সালে পিটিএ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ফ্রিল্যান্সার ও বিদেশি মিশনদের জন্য নিয়ম বেঁধে দেয়, কাজের সুবিধার্থে ভিপিএন ব্যবহার করা প্রয়োজন হলে তা নিবন্ধন করে নিতে হবে। তবে এই উদ্যোগে মুখ থুবড়ে পড়ে।

২০১০ সালে ভিপিএন নীতিমালাও চালু করে সরকার। তবে তবে এটি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার বলেন, অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। তারা দেশটিতে কার্যালয় খুলতে সম্মত হয়েছে।

কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান পাকিস্তানে ভার্চুয়াল অফিস খোলার প্রস্তাব দিয়েছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ১৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ ব্যবসার কাজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন, কিন্তু এই প্ল্যাটফর্মগুলো কোনো কর দেয় না।

তিনি জানান, সারা বিশ্বেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কাছ থেকে কর আদায় করা হয় এবং পাকিস্তানেও তা বাস্তবায়ন করা দরকার।