টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে ফিরছেন স্থানীয়রা, চলছে ঘর মেরামতের কাজ

সুমন আলী
সুমন আলী
15 May 2023, 06:05 AM
UPDATED 15 May 2023, 13:00 PM

ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের পর আজ সোমবার স্বাভাবিক আছে সেন্টমার্টিনের পরিস্থিতি। শান্ত আছে সাগর। লোকজন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত করছেন।

সকাল ১১টার দিকে সেন্টমার্টিনে অবস্থানরত পর্যটন ব্যবসায়ী তৈয়ব উল্লাহ ও তকি উসমানি খোকা দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানান।

তৈয়ব উল্লাহ বলেন, 'এখন সেন্টমার্টিনের পরিবেশ শান্ত। রৌদ্রোজ্জ্বল আকাশ। লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত করছেন। উপড়ে যাওয়া ও ভেঙে পড়া গাছপালা সরিয়ে ফেলছেন। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সবাই যে যার ঘরে ফিরে গেছেন।'

সেন্টমার্টিন
ছবি: তকি উসমানি

শনিবার বিকেল থেকে বিদ্যুৎ নেই জানিয়ে এই পর্যটন ব্যবসায়ী বলেন, 'বিদ্যুৎ না থাকায় লোকজনের একটু কষ্ট হচ্ছে। মোবাইলে চার্জ দিতে পারছে না। বিদ্যুতের লাইনের ক্ষতি হয়েছে। শুনলাম টেকনাফ থেকে লোকজন এসে বিদ্যুতের লাইন ঠিক করবে।'

তৈয়ব উল্লাহ বলেন, 'যতটুকু জানতে পেরেছি ৩ থেকে ৪ জন মানুষ সামান্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া আর কোনো হতাহতের খবর নেই।'

খাবার বা অন্য কিছু দিয়ে কেউ কোনো সহযোগিতা করছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আজ কেউ খাবার দিচ্ছে না। যে যার মতো করে খাচ্ছেন। আর বাড়িঘর মেরামতে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি।'

আরেক পর্যটন ব্যবসায়ী তকি উসমানি খোকা বলেন, 'লোকজন এখন ভেঙে যাওয়া ঘর ঠিক করছেন। রাস্তাঘাটে গাছপালা পড়ে আছে তা পরিষ্কার করছেন।'

কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখানে ২ থেকে ৩ জন মানুষ আহত হয়েছেন শুনেছি। তাছাড়া আর কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গাছপালা ভেঙে গেছে। ৬ শতাধিক বাড়ির ক্ষতি হয়েছে।'

তকি উসমানি বলেন, 'যাদের বাড়ি ভেঙে গেছে তারা আত্মীয়ের বাসায় আছেন। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি। সকালে একটা হেলিকপ্টার এসে দেখে গেছে।'

আজ সকাল থেকেই টেকনাফের সঙ্গে ট্রলার যোগাযোগ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'সাগর শান্ত আছে। সকালে প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি ট্রলার এসেছে। যারা সেন্টমার্টিন থেকে চলে গিয়েছিলেন তারা ফিরে আসছেন ট্রলারে করে।'

সেন্টমার্টিন
সেন্টমার্টিনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত করা হচ্ছে। ছবি: তকি উসমানি

ছেড়ে দেওয়া গরু-ছাগলগুলোর অবস্থা জানতে চাইলে তকি উসমানি বলেন, 'গরু-ছাগলের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সব ঠিক আছে।'

টেকনাফে কাজ করা কোস্ট ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক এম এ হান্নান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টেকনাফের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত করছেন। যে যার মতো ঘরে গেছেন। আর কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে নেই।'

এ দিকে আজ বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সমুদ্র বন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।