বিশ্বের সবচেয়ে বড় ৫ গাড়ি

অনিন্দিতা চৌধুরী
অনিন্দিতা চৌধুরী
14 September 2023, 06:37 AM
UPDATED 14 September 2023, 13:03 PM

গাড়ি বড় হলেই যে তা গুণগত মানে সেরা হবে, বিষয়টি সেরকম নয়। তবে বড় গাড়ির সঙ্গে বিত্ত ও ক্ষমতার এক ধরনের যোগসূত্র খুঁজে পান অনেকেই। তাই এ বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ কমবেশি অনেকেরই আছে।

আজকের এ লেখায় থাকছে বিশ্বের 'সবচেয়ে বড়' পাঁচ গাড়ির বিস্তারিত।

২০২০ ফোর্ড সুপার ডিউটি এলডব্লিউবি ক্রু ক্যাব

আরিপাস
২০২০ ফোর্ড সুপার ডিউটি । ছবি: সংগৃহীত

নামে 'ক্যাব' হলেও এটা আমাদের চেনাজানা ট্যাক্সি ক্যাবের মতো নয় মোটেও। বরং পিকআপ ট্রাকের প্রযুক্তি আর সক্ষমতা– এ দুইয়ের সমন্বয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। বাণিজ্যিক ট্রাকের মধ্যে অন্যতম স্থান দখল করে আছে এই গাড়িটি। এতে আছে ১৬০ ইঞ্চির হুইলবেস।

ভ্রমণ
২০২০ ফোর্ড সুপার ডিউটি । ছবি: সংগৃহীত

শুধু আকারেই নয়, গতিতেও দুর্দান্ত এই গাড়িটি। গতির সঙ্গে কোনো আপোষ না করেই এর লোডিং বে-তে ৬ হাজার ২০০ পাউন্ড ওজন বহন করা যায়। 'সুপার' অভিজ্ঞতা পেতে চালককে নিরাশ করে না 'সুপার ডিউটি'। এছাড়াও এতে আছে ৬ দশমিক ৭ লিটারের পাওয়ার স্ট্রোক ভি-৮ ইঞ্জিন, যা ঊর্ধ্বে ৪৭৫ হর্সপাওয়ারে চলতে পারে।

দ্য আমেরিকান ড্রিম

meeting_0.jpg

টাইটানিকের মতো জাহাজে পুরাদস্তুর শহর নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যায়, তা আমরা মেনে নিতে পারলেও স্থলপথে চলা গাড়িতে কখনো জাকুজি, সুইমিংপুল এমনকি গলফ খেলার ছোটখাটো মাঠ থাকতে পারে, এ যেন এক অলীক কল্পনা। কিন্তু 'দ্য আমেরিকান ড্রিম' নামের ১০০ ফুট দীর্ঘ গাড়িটিতে যাত্রীদের সুবিধার জন্য টেলিফোন, ফ্রিজ, একাধিক টেলিভিশন ইত্যাদি পণ্যেরও অভাব নেই। সঙ্গে বাড়তি পাওনা হিসেবে আছে একটি হেলিপ্যাডও, যা কিনা গাড়ির সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং ৫০০০ পাউন্ড ওজন বহন করতে সক্ষম। ক্যাডিলাক এলডোরেডো গাড়ির ১৯৭৬ সালের মডেলের আদলে এটি নির্মাণ করা হয়।

তাই গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের দীর্ঘতম গাড়ি– নামকরণেই আমেরিকানদের স্বপ্ন এই বাহনটির কথা না বলে এ তালিকা পূর্ণ হবার নয়। ১৯৮৬ সালেই বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়ির তকমা কেড়ে নিয়েছিল এটি। পরবর্তীতে ২০২২ সালের দিকে বহু বছরের ঘষামাজার পর আবারো নিজের রেকর্ড কেড়ে নেয় এই জাদুকরী যান। এই লিমোজিনটিতে করে আরামসে ৭৫ জন যাত্রী সফর করতে পারবেন। নামকরণের সার্থকতা ধরে রাখতে কোনো দিক দিয়েই পিছিয়ে নেই 'দ্যা আমেরিকান ড্রিম'।

মার্সিডিজ বেঞ্জ জি ৬৩ এএমজি ৬X৬

Silversea-1.jpg
মার্সিডিজ বেঞ্জ জি৬৩ । ছবি: সংগৃহীত

২০১৩ সালে মার্সিডিজ বেঞ্জ জি ৬৩ এএমজি ৬X৬ নির্মাণ শুরু করে, পরে আবার ২০১৫ সালে এর বিশেষত্ব ধরে রাখতে এটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়। সবমিলিয়ে মাত্র ১০০টি মার্সিডিজ বেঞ্জ জি ৬৩ এএমজি ৬X৬-ই সৌভাগ্যবান চালকদের গতিপথে সঙ্গী হতে পেরেছে। আর এ কারণেও মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ির মডেলগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম বিশেষ জায়গা জুড়ে রয়েছে। এর ৬X৬ পোর্টাল অ্যাক্সেল অন-রোড বা অফ-রোড, দুই অঞ্চলেই সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে। 'মিলিটারি স্টাইল' পিকআপ ট্রাক হিসেবে  অত নামডাক না থাকলেও এই ঘরানার বেশ ভালো উদাহরণ এই গাড়িটি।

সুপ্পলি
মার্সিডিজ বেঞ্জ জি৬৩ । ছবি: সংগৃহীত

১৯৭৩ ক্রাইসলার ইম্পেরিয়াল লে ব্যারন

Tahsan.jpg
১৯৭৩ ক্রাইসলার ইম্পেরিয়াল লে ব্যারন’। ছবি: সংগৃহীত

বড় গাড়ি তৈরি করা নিয়ে উন্নত বিশ্বে যখন চলছে তুমুল প্রতিযোগিতা, তখনই জন্ম হয় ক্রাইসলার ইম্পেরিয়াল লে ব্যারন-এর। নামেই যে গাড়ি সম্রাট, তার সাম্রাজ্য নিয়ে কি আর সন্দেহ রাখা যায়! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নির্মিত দীর্ঘতম নন-লিমোজিন গাড়ির তকমা তাই এর কপালেই জোটে।

আড়াই টন ওজনের এই গাড়িটিতে ব্যবহার করা হয় ২৩৫ দশমিক ৩ ইঞ্চি পুরু মার্কিন ইস্পাত। শুধু দৈর্ঘ্যেই নয়, ওজনেও এর জুড়ি নেই। তবে এর ৭ দশমিক ২ লিটারের ভি-৮ ইঞ্জিনের ইন্ধন যোগাতে মালিকরা হিমশিম খাচ্ছিলেন।

Bhalobasa-Emon-E-Hoy-1.jpg
১৯৭৩ ক্রাইসলার ইম্পেরিয়াল লে ব্যারন’। ছবি: সংগৃহীত

তাই দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে সময়ের মূল্যস্ফীতির কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে ১৯৮৩ সালেই বাজার থেকে হারিয়ে যায় এই বিশেষ চেহারার গাড়িটি। অন্তত বিলাসবহুল ও বাছাইকৃত ক্রেতাগোষ্ঠীর জন্য আবারো গাড়িটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা ঠিকই করা হয়েছিল, কিন্তু স্থলপথের এই 'ইয়ট' আর ফেরানো যায়নি।

২০২৩ ক্যাডিলাক এসক্যালেড ইএসভি

Jannat Mishti and director.jpg
২০২৩ ক্যাডিলাক এসক্যালেড ইএসভি। ছবি: সংগৃহীত

স্থলপথে যদি আধুনিক জলযানের তালিকা করা হয়, তবে সবার প্রথমে থাকা নাম হবে এই গাড়িটির। এসইউভি পরিবারের ২২৭ ইঞ্চি দীর্ঘ এই গাড়িটি সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে বিশেষ এসইউভির স্থান কেড়ে নেবে অনায়াসেই। এর ৩৭ ইঞ্চি দীর্ঘ টাচ-স্ক্রিন, সেই সঙ্গে থাকা তিনটি ওএলইডি স্ক্রিন হয়তো বড়সড় টিভির চেয়েও বড়। শুধু গতি বা আকার নয়, বিনোদনেও কোনোদিক থেকেই পিছিয়ে নেই এটি। চালককে প্রিয় গানের মূর্ছনায় ভাসিয়ে দিতে সেরা মানের ৩৭-স্পিকার একেজি সাউন্ড সিস্টেম রয়েছে। এই 'বডি অন ফ্রেম' এসইউভি গাড়ি চেহারা ও স্বভাব, উভয় মানদণ্ডেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ গাড়িগুলোর একটি।

সূত্র: কোপাইলটসার্চ ডট কম, ডব্লিউটিএসপি ডট কম, ড্রাইভ ডট কম ডট এইউ, ক্লাসিক ডট কম, কারগুরুস ডট কম