রেফারি বডিক্যাম ও দ্রুত অফসাইড প্রযুক্তি আনতে চায় ফিফা
২০২৬ বিশ্বকাপে নতুন রেফারিং প্রযুক্তি ও আরও কঠোর সময়নিয়ন্ত্রণ নিয়ম আনার বিষয়ে ভাবছে ফিফা। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এ বছরের ক্লাব বিশ্বকাপে এসব প্রযুক্তির যে ট্রায়াল হয়েছে, তার ভিত্তিতেই এগোতে চান তারা, বিশ্বকাপের ড্রয়ের আগের দিন এমনটাই জানিয়েছেন সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা।
ফিফার ইনোভেশন প্রধান ইয়োহানেস হোলৎসমুলার জানান, রেফারির বডিক্যাম সিস্টেম এবং উন্নত সংস্করণের সেমি-অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্যবহার করতে চায় ফিফা। তবে এর জন্য আগে নিয়মগত অনুমোদন পাওয়া জরুরি।
হোলৎসমুলার বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ক্লাব বিশ্বকাপে আমরা খুব সফলভাবে রেফারি বডিক্যামের ট্রায়াল করেছি। আমরা চাই সেই সফলতাকে আরও এগিয়ে নিতে।'
এই বডিক্যাম সিস্টেম, যার নাম দেওয়া হয়েছে 'রেফারি উইথ ইউ', লাইভ টেলিভিশন ফিড ও স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে রেফারির চোখে দেখা মুহূর্তটি দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে পারে।
তবে তিনি জানান, 'এটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে। বিশ্বকাপে ব্যবহার করতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন।'
নিয়ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত আগামী ফেব্রুয়ারিতে ওয়েলসে অনুষ্ঠিতব্য ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফএবি)-এর সভায় নেওয়া হবে।
হোলৎসমুলার জানান, ক্লাব বিশ্বকাপের সময় সেমি-অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করা হয়। এবার নির্দিষ্ট অফসাইড অ্যালার্ট সরাসরি সহকারী রেফারিকে পাঠানো হয়েছে, শুধু ভিএআর কক্ষে নয়। এতে সিদ্ধান্ত দিতে দেরি হয়নি।
'পজিশনাল অফসাইডের ক্ষেত্রে অডিও অ্যালার্ট সরাসরি সহকারী রেফারির কাছে পৌঁছায় এবং তারা মুহূর্তেই ফ্ল্যাগ তুলতে পারে। ফলে সিদ্ধান্ত দিতে আর বাড়তি দেরি হয়নি।'
তিনি দাবি করেন, প্রযুক্তি ফুটবলের স্বাভাবিক প্রবাহ নষ্ট করছে না; বরং আগের ঐতিহ্যপূর্ণ গতিশীলতাই ফিরিয়ে আনছে।
'আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন ও খেলার ঐতিহ্যের মধ্যে ভারসাম্য রাখা। প্রযুক্তি রেফারি, কোচ, মেডিকেল টিম এবং ভক্তদের সহায়তা করবে, খেলার ধরণ বদলাবে না।'
ফিফা রেফারিস কমিটির চেয়ারম্যান পিয়েরলুইজি কোল্লিনা জানান, গোলকিপারদের বল ধরে রাখার সময়সীমা, যা গত মার্চে আইএফএবি ঘোষণা করে, খেলার গতি বাড়ানোর লক্ষ্যেই। ফিফা দেখেছে, কিছু গোলকিপার বল ধরে রাখতে ২৫ সেকেন্ড পর্যন্ত সময় নেন।
তিনি বলেন, 'আমরা গোলকিপারদের জন্য দু'সেকেন্ড বেশি রেখেছি। কিন্তু আট সেকেন্ড শেষ হলেই রেফারিকে সতর্কভাবে হস্তক্ষেপ করতে হবে, এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে হবে।'
কোল্লিনা আরও দাবি করেন, আগের দিনের তুলনায় আজকের রেফারিদের কাছে থাকা প্রযুক্তিগত সহায়তা ও সঠিকতা 'আকাশ-পাতাল তফাৎ'।