বড় লিড পেল বাংলাদেশ, সাকিবের রেকর্ড ছুঁলেন তাইজুল
তাইজুল ইসলামের ডেলিভারিতে রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টা করলেন ম্যাথু হামফ্রিস। ইনসাইড এজ হওয়ায় বল গেল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট। খালেদ আহমেদ ডাইভ দিয়ে ক্যাচ লুফে নিতেই গুটিয়ে গেল আয়ারল্যান্ড। একইসঙ্গে রেকর্ড গড়লেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিদের তালিকায় সাকিব আল হাসানকে ছুঁয়ে ফেললেন তিনি।
শুক্রবার মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে আইরিশদের প্রথম ইনিংস থেমেছে ২৬৫ রানে। শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৫ উইকেটে ৯৮ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল তারা। এদিন বাকি ৫ উইকেট খুইয়ে তারা যোগ করেছে আরও ১৬৭ রান। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৭৬ রান তোলা বাংলাদেশ পেয়েছে ২১১ রানের বড় লিড। তবে প্রতিপক্ষকে ফলো-অনে না পাঠিয়ে ফের ব্যাটিংয়ে নেমেছে তারা।
৭৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার তাইজুল। ২৪২ উইকেট নিয়ে এই ম্যাচ খেলতে নেমেছেন তিনি। এখন বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিবের সঙ্গে টেস্টে যৌথভাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। দুজনেরই নামের পাশে সমান ২৪৬ উইকেট। তবে সাকিবকে যেখানে খেলতে হয়েছে ৭১ টেস্ট, সেখানে ৫৭তম টেস্টেই তার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন তাইজুল। আইরিশদের দ্বিতীয় ইনিংস বাকি থাকায় চলতি টেস্টেই সাকিবকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন তিনি।
৭ উইকেটে ২১১ রান নিয়ে লাঞ্চের পর খেলতে নামে আয়ারল্যান্ড। একপ্রান্ত আগলে থাকা লরকান টাকার ও জর্ডান নিল জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। বাংলাদেশ নতুন বল নেওয়ার পর তৃতীয় ওভারে ভাঙে জুটি। পেসার ইবাদত হোসেনের বলে টপ এজ হয়ে কভারে মুমিনুল হকের তালুবন্দি হন নিল। ৮৩ বলে নয়টি চারে তার রান ৪৯। থামে ১৪৫ বলে ৭৪ রানের জুটি।
এরপর সফরকারীদের অলআউট করতে বেশি সময় নেয়নি স্বাগতিকরা। আরেক পেসার খালেদের বলে অভিষিক্ত গ্যাভিন হোয়ে (১০ বলে ৪ রান) উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে ক্যাচ দেওয়ার পর তাইজুল ছাঁটেন হামফ্রিসকে (১৪ বলে ৪ রান)। ছয়ে নামা টাকার অপরাজিত থাকেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৫ রানে। তার ১৭১ বলের ধৈর্যশীল ইনিংসে চার সাতটি। বল হাতে তাইজুলকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া খালেদ ও আরেক বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ দুটি করে উইকেট নেন।
এর আগে দিনের প্রথম সেশন ভালো কাটে আয়ারল্যান্ডের। তারা ৩১ ওভারে ২ উইকেট খুইয়ে যোগ করে ১১৩ রান। প্রথম ঘণ্টায় বাংলাদেশকে হতাশ করে দ্রুত রান আনেন টাকার ও স্টিফেন ডোহেনি। এরপর ভূমিকম্পের কারণে খেলা বন্ধ থাকে তিন মিনিট। সেসময় ভয়ঙ্কর ঝাঁকুনিতে পুরো মাঠে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ধাতস্থ হয়ে ফের খেলা শুরু হলে তিন বলের মধ্যে জোড়া আঘাত করে টাইগারদের স্বস্তিতে ফেরান তাইজুল।
অভিজ্ঞ স্পিনারের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান আরেক অভিষিক্ত ডোহেনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান। ৭৭ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন চারটি চার। তার সঙ্গে টাকারের জুটি ছিল ১৫০ বলে ৮১ রানের। এক বল পর তাইজুলের আরেকটি দারুণ ডেলিভারিতে লাইন মিস করে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনও স্টাম্প হারান। তিনি খুলতে পারেননি রানের খাতা।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে উড়ন্ত শুরু পাইয়ে দিয়েছেন দুই ওপেনার। চা বিরতি পর্যন্ত ৭ ওভারে তাদের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৪১ রান। মাহমুদুল হাসান জয় চারটি চারে ২৩ বলে ২৩ ও সাদমান ইসলাম তিনটি চারে ১৯ বলে ১৮ রানে খেলছেন। হাতে ১০ উইকেটের সবকটি নিয়ে বাংলাদেশের লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫২ রান।
