সিনেমাকেও হার মানায় রূপসজ্জাকর হারুনের ভিক্ষাজীবন

জাহিদ আকবর
জাহিদ আকবর
15 October 2018, 12:11 PM
UPDATED 15 October 2018, 19:08 PM

আহারে জীবন! আহারে সিনেমা! যার হাতের পরশে কয়েক মুহূর্তেই মোহনীয় হয়ে উঠতেন সিনেমার নায়ক-নায়িকারা। যিনি শাবানা, ববিতা, অঞ্জু, মৌসুমীর মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের গড়ে তুলেছিলেন আরও রূপসী করে সেই রূপসজ্জাকর কাজী হারুন আজ ভিক্ষা করছেন।

‘বেদের মেয়ে জোছনা’, ‘অন্য জীবন’, ‘শঙ্খমালা’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘জীবন সংসার’-সহ শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন এই রূপসজ্জাকর। ১৯৯৪ সালে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ ছবিতে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

কিন্তু হায়! মেয়ের বিয়ের খরচ যোগাতে ২০১০ সালে মাত্র আট হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন পুরস্কার হিসেবে পাওয়া সেই সোনার মেডেলটি।

রূপসজ্জাকর কাজী হারুন দক্ষিণ যাত্রাবাড়ির ফরিদাবাদ বস্তিতে স্ত্রী মহুয়া আকতারকে নিয়ে থাকেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে ঘর ভাড়া দেন স্ত্রী, আর ভিক্ষা করে জীবনধারণের খরচ চালাচ্ছেন এই রূপসজ্জাকর। ভিক্ষার টাকাতেই কোনো মতে চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের চিকিৎসা।

স্ত্রী মহুয়া আকতার বলেন, “২০০৯ সালে স্বামীর স্ট্রোক হওয়ার পর থেকেই সব এলোমেলো হয়ে যায়। শুরু হয় কষ্টের দিন। স্ট্রোকের পর তার শরীরের ডান পাশ অকেজো হয়ে যায়। অসুস্থ হওয়ার কারণে সিনেমার কেউ খবরও নেননি কখনো। অভিমান আর কষ্টে বাধ্য হয়েই ২০১১ সাল থেকে তিনি ভিক্ষা করতে শুরু করেন।”

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মহুয়া বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাই। আমাদের চেনাজানা কোনো প্রভাবশালী মানুষ নেই। কে আমাদের তার কাছে নিয়ে যাবেন? সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করলাম, তিনি যেনো আমাদের পাশে দাঁড়ান।”

মহুয়ার আশা, যে হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন তার স্বামীর গুণের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন, সেই হাতে এবার তিনি মমতার আস্থা রাখবেন।