অঞ্জু ঘোষের এই পরিচয় কি জানতেন?

By স্টার অনলাইন রিপোর্ট
12 September 2018, 07:31 AM
UPDATED 12 September 2018, 15:45 PM

Hasan Matiur Rahman Anjju Ghosh and Nur Hossain Balai
হাসান মতিউর রহমান (বামে), অঞ্জু ঘোষ ও পরিচালক নূর হোসেন বলাই। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

‘বেদের মেয়ে জোসনা’-খ্যাত নায়িকা অঞ্জু ঘোষের এই পরিচয় আপনি জানতেন কি? অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি গানও করতেন।

১৯৯০ সালে তার কণ্ঠে ১২টি গান নিয়ে ‘মালিক ছাড়া চিঠি’ নামের একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছিল। এমনই তথ্য ফেসবুকে লিখেছেন গীতিকবি হাসান মতিউর রহমান।

তিনি তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এই সেই অঞ্জু ঘোষ। সবার প্রিয় নায়িকা এবং গায়িকা। জন্ম ফরিদপুরে। বড় হয়েছেন চট্টগ্রামে। প্রথমে যাত্রাপালায়। পরে বড় পর্দায়। ২২ বছর পর আবার এসেছেন নিজের দেশে। ম্যাডামের সাথে আমার কাজের অনেক স্মৃতি। ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ সুপারহিট হবার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি।’

‘৯০ সালের কথা। বাসার টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন। ধরতেই অপর প্রান্ত থেকে বললেন ‘অঞ্জু কথাচিত্র’ থেকে বলছি। আমাদের ম্যাডাম আপনার সাথে একটু কথা বলবেন। সব শুনে বললাম কাল কাকরাইলের অফিসে ১১টায় আসবো। পরদিন সময় মতোই গেলাম। দেখি ম্যাডাম টেবিলে হরেক রকম খাবার সাজিয়ে অপেক্ষা করছেন। ঢুকলাম। ভয়ে ভয়ে। সামনাসামনি এই প্রথম দেখা।…. বললেন, আমাকে কিছু গান লিখে দিতে হবে। আমি গাইবো।’

‘শুটিং থেকে ফেরার সময় সেদিন আরিচা ঘাটে শুনি এক মুদি দোকানে একটা গান বাজছে। খবর নিয়ে জানলাম শিল্পী আশরাফ উদাসের ‘হারানো প্রেম’- গান লিখেছেন আপনি। অনেক ভালো লেগেছে আমার। এই রকম কিছু গান লিখে দিন। লিখবেন আমার উত্তরার বাসায় বসে। দুইটা গাড়ি। একটা আপনার জন্য। যতদিন গান লেখা-রেকর্ডিং শেষ না হয় ততদিন ড্রাইভার আপনার পিছে আঠার মতো লেগে থাকবে। রাজি হলাম। সুর করার জন্য সাথে নিলাম আশরাফ উদাসকে। ছুটির দিনে আশরাফ প্র্যাকটিস করায়। ভালো সম্মানী দেয়।’

‘গান লেখা শেষ। মিউজিক করার দায়িত্ব দিলেন ফরিদ আহমেদ ভাইকে। স্টুডিও নিলাম বেইলি রোডের পান্না ভাইয়ের অডিও আর্টে। বাজালেন মানাম ভাই, লিটন ডি কস্টা, মরহুম বারী সিদ্দিকী, মনিরুজ্জামান ভাই। গিটারে সেলিম হায়দার ভাই। তবলায় মিলনদা।’

হাসান মতিউর রহমান আরও লেখেন, ‘রাত ৩টায় শুরু করতাম ভয়েস নেয়া। দিনে ম্যাডাম শুটিং করতেন। একে একে হয়ে গেল ১২ গান। অনেক কাজের মাঝেও কী করে যে গাইলেন! দম ছোট তাই প্রতিটি শব্দ আলাদা করে গাইতে হলো। আমি অবাক হয়ে গেলাম।’

‘একদিন আসাদ গেটের মিডনাইট সান রেস্টুরেন্টে মহা আড়ম্বরে হলো ক্যাসেটের মোড়ক উম্মোচন। বসেছিল চলচ্চিত্র অঙ্গনের মিলনমেলা। কে আসেনি ম্যাডামের দাওয়াতে! পরদিন বাজারে এলো আমার ‘চেনাসুর’ থেকে অঞ্জু ঘোষের নিজ কণ্ঠে গাওয়া একটি পূর্ণাঙ্গ গানের অ্যালবাম ‘মালিক ছাড়া চিঠি’৷ সেই চিঠি মালিকের হাতে পৌঁছেছিল কী না জানিনা! ‘

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২২ বছর পর অভিমান ভুলে গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এসেছিলেন চিত্রনায়িকা অঞ্জু ঘোষ। এফডিসিতে ৯ সেপ্টেম্বর শিল্পী সমিতি তাকে সংবর্ধনা দেয়। এরপর দিন তিনি ভারতে ফিরে যান।