নিজেদের তৈরি ‘আল-ইয়াসিন’ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলি হামলা প্রতিহতের দাবি হামাসের

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
31 October 2023, 08:12 AM
UPDATED 31 October 2023, 14:27 PM

নিজেদের বানানো ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র 'আল-ইয়াসিন' ব্যবহার করে ইসরায়েলের স্থল হামলা প্রতিহত করার দাবি করেছেন হামাসের যোদ্ধারা।

আজ মঙ্গলবার গাজায় ইসরায়েলের স্থল হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সম্প্রতিকালে গাজায় স্থল হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে ১ হাজার ৪০০ ইসরায়েলি নিহতের পর প্রতিশোধ হিসেবে দেশটি গত ২৪ দিন ধরে গাজায় নির্বিচার বিমানহামলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি সীমিত আকারে স্থল হামলাও চালানো হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে গতকাল গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে না জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, 'এটা যুদ্ধের সময়'।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার থেকে গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে যাওয়া সড়ক লক্ষ্য করে দুটি ভিন্ন অবস্থান থেকে স্থল হামলা চালায়।

Detention Camps-4.jpg
গাজা সীমান্তে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ব্যবহৃত ইসরায়েলি ট্যাংক। ছবি: রয়টার্স

তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের সেনারা হামাসের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর এক সদস্যকে উদ্ধার করেছে। ইসরায়েলের দাবি, ৭ অক্টোবর ২৩৯ জনকে জিম্মি করে হামাস।

আজ ভোরে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়।

আল-কাসাম ব্রিগেডে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী চারটি সামরিক গাড়ি নিয়ে দক্ষিণ গাজায় হামলা চালাচ্ছিল। গাড়িগুলোতে মেশিনগান বসানো ছিল।

Language grab-3.jpg
গাজার আল-কুদস হাসপাতালের আশেপাশের এলাকায় হামলা অব্যাহত রয়েছে। ছবি: রয়টার্স

আল-কাসাম স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আল-ইয়াসিন ১০৫ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে ইসরায়েলের এই হামলা প্রতিহত করেছে।

উত্তর-পশ্চিম গাজায় দুটি ইসরায়েলি ট্যাংক ও একটি বুলডোজারের বিরুদ্ধেও একই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানায় আল-কাসাম ব্রিগেড।

যুদ্ধক্ষেত্রের এসব প্রতিবেদন রয়টার্স যাচাই করতে পারেনি। এ বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কাছে মন্তব্য চাওয়া হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

পৃথকভাবে ইসরায়েল দাবি করেছে, আজ তাদের সেনাবাহিনী হামাসের মাটির নিচের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কে হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, 'গত এক দিনে আইডিএফ প্রায় ৩০০ অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ছিল মাটির নিচে অবস্থিত ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট ছোঁড়ার অবকাঠামো ও হামাসের সামরিক কমপাউন্ড।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হামাসের যোদ্ধারা মেশিন গান ও ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে প্রত্যুত্তর দেয়।

আইডিএফ জানায়, 'সেনাবাহিনীরা হামাসের যোদ্ধাদের হত্যা করেছে এবং বিমানবাহিনীকে তাদের অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়েছে।'

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে গতকাল পর্যন্ত ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৮ হাজার ৩০৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩ হাজার ৪৫৭ জনই শিশু।

Lalmonirat.jpg
আল-ইয়াসিন ১০৫ ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানান, গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১৪ লাখই গৃহহীন হয়েছেন।

নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ইসরায়েলের শীর্ষ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে ও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির জোরালো দাবি আসছে।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী স্থল হামলার ক্ষেত্রে ধীরে চলার নীতি অনুসরণ করছে। তারা আশা করছে, হামাস জিম্মি মুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী হতে পারে।