ফ্যাসিবাদ-সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য আমাদের শক্তি: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আমরা ঐক্যটা দেখাতে চাই, ফ্যাসিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্যটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। এর মাধ্যমেই আমরা এ ধরনের জাতীয় সংকট রুখতে পারবো।
আজ শনিবার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, 'আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা অনেকটাই পরিবর্তিত হয়েছে। জনপ্রত্যাশা ও গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা অনুযায়ী, আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সে রকম গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমরা অব্যাহত রেখে, চর্চা করে আগামী দিনে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র করব।'
'আমাদের এই গণতন্ত্র উত্তরণের পথটাকে যেন আমরা আরও সহজ করতে পারি, সে জন্য সবার সহযোগিতা আহ্বান করছি,' বলেন তিনি।
আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার কথা রয়েছে, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, 'সব রাজনৈতিক নেতারা যাতে নিরাপদে থাকে, সে ব্যবস্থা করার জন্য সরকার প্রতি আমরা আহ্বান জানিয়েছি।'
আমাদের ভেতরে যেন এমন একটি ঐক্য থাকে, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল আমরা ঐক্যকে সবাই মিলে যেন আঁকড়ে থাকি, তাতে জাতীয়ভাবে এই সন্ত্রাসকে আমরা মোকাবিলা করতে পারবো। যদি আমরা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো পরস্পর বিচ্ছিন্ন হই এবং পরস্পরের বিরোধিতা করতে থাকি, তাহলে ফ্যাসিবাদ আসকারা পাবে। সেই জায়গায় যেন আমরা না যাই, এই আহ্বানটাই আমরা জানিয়েছি এবং এটাই হচ্ছে মূল ভিত্তি, যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, 'যদি আমাদের ভেতরে ঐক্য থাকে এবং আমরা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, আমাদের ভেতরে বিভেদ না থাকে, তাহলে আমরা জাতীয়ভাবে এই জাতীয় সব ধরনের সন্ত্রাসকে মোকাবিলা করতে পারবো এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারবো।'
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, 'আমরা জানি এই শক্তি দেশের ভেতরেও সক্রিয় এবং দেশের বাইরেও সক্রিয়। আমরা ঘটনার (হত্যাচেষ্টা) সুষ্ঠু তদন্তের জন্য এবং তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছি।'
চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এবং যথাযথ তদন্ত করে যদি সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেপ্তার করা যেত, আইনের আওতায় আনা যেত, তাহলে হয়তো এ রকমের ঘটনা আরও হয়তো ঘটতে উৎসাহিত হতো না।'
বিএনপির পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও এ সময় জানান তিনি। বলেন, 'রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের সর্বোচ্চ অঙ্গীকার এবং আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা এই বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।'
প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, 'তিনি বলেছেন যেন একটা যৌথ স্টেটমেন্ট আমরা সবাই মিলে দেই এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি।'
ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিবাদ সভায় বিএনপি যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে আমরা যাব। আমরা ঐক্যটা দেখাতে চাই। ফ্যাসিবাদবিরোধী, সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্যটা দেখাতে চাই। এটাই হবে আমাদের শক্তি। একমাত্র এর মাধ্যমেই আমরা এই জাতীয় ঘটনাকে রুখতে পারবো।'
অন্য কোনো প্রার্থীর ওপর হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না জানিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'সরকারের দায়িত্ব আছে, রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব আছে, জনগণের সচেতনতা জরুরি। সে জন্য আমরা বলেছি যে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যৌথ বাহিনী এবং সরকার-জনগণ, রাজনৈতিক দলগুলো মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে যদি আমরা এগুলোকে মোকাবিলা করি, এই ধরনের ঘটনা আমরা বন্ধ করতে পারবো।'
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, 'এই জাতীয় দুএকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে যদি পতিত ফ্যাসিবাদীরা মনে করে বাংলাদেশের নির্বাচন রুখতে পারবে, সেটা ভুল ধারণা।'