‘বেঁচে আছি এটাই আনন্দের’

By স্টার অনলাইন রিপোর্ট
14 June 2023, 10:10 AM
UPDATED 14 June 2023, 18:24 PM

'আজ আমার ৭৫ বছর পূর্ণ হলো, ৭৬ বছরে পা রাখলাম। জীবনের এই পর্যায়ে এসেও সুস্থ আছি, ভালো আছি। এক কথায় বেঁচে আছি এটাই আনন্দের।'

জন্মদিন উপলক্ষে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন কথাগুলো বলেন দ্য ডেইলি স্টারকে। বর্তমানে তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি।

বহুল পঠিত 'হাঙর নদী গ্রেনেড' উপন্যাসের লেখক সেলিনা হোসেনের জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৪ জুন রাজশাহীতে। বাবা এ কে মোশাররফ হোসেন ও মা মরিয়ম-উন-নিসার ৯ সন্তানের মধ্যে সেলিনা হোসেন চতুর্থতম। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে পদ্মা বিধৌত নদী অববাহিকা রাজশাহী শহরে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় বিএ অনার্স এবং মাস্টার্স পাস করেন।

'যাপিত জীবন'র সেলিনা হোসেন দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন বাংলা একাডেমিতে। সে সময় 'অভিধান প্রকল্প', 'বিজ্ঞান বিশ্বকোষ প্রকল্প', 'বিখ্যাত লেখকদের রচনাবলী প্রকাশ', 'লেখক অভিধান', 'চরিতাভিধান' এবং 'একশত এক সিরিজের' গ্রন্থগুলো প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করেন। একাডেমির পরিচালক পদে থেকে অবসর নেন। পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির।

ষাটের দশক থেকে তার লেখালেখা শুরু। তার প্রথম গল্পের বই 'উৎস থেকে নিরন্তর' প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে। বর্তমানে তার লেখা উপন্যাসের সংখ্যা ৪৩টি। গল্প ১৬টি। প্রবন্ধ ১০টি। শিশু-কিশোর এবং সাহিত্য ৩৫টি। ভ্রমণ কাহিনী একটি। প্রবন্ধ গ্রন্থ ১৫টি। বাংলাদেশের অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে তার রচনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেশের বাহির পড়ানো হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশপত্রে হাঙর নদী গ্রেনেড উপন্যাসটি। 

সেলিনা হোসেনের গল্প-উপন্যাস ইংরেজিসহ অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। বিশেষ করে ১৯৮৭ সালে 'হাঙর নদী গ্রেনেড' ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ হয়। ২০০৩ সালে ভারতের মালয়ালম ভাষায় অনূদিত হয়ে কেরালা থেকে প্রকাশিত হয়। ২০০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এলিনয় রাজ্যের ওকটন কমিউনিটি কলেজে দুই সেমিস্টারে পাঠ্য করে। ২০১৬ সালে উপন্যাসটি "রিভার অব মাই ব্লাড" নামে প্রকাশিত হয় দিল্লির রুপা পাবলিকেশন্স থেকে। ১৯৯৯ সালে টানাপোড়েন উপন্যাস ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ  হয় এবং ২০০৩ সালে  এই উপন্যাসটি উর্দুতে অনূদিত হয়ে পাকিস্তানের লাহোর থেকে প্রকাশিত হয় । পূর্ণ ছবির মগ্নতা উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ পায় ২০১২ সালে। ২০১৮ সালে এই উপন্যাসটি অসমিয়া ভাষায় অনূদিত হয়ে গৌহাটি থেকে প্রকাশিত হয়। এইভাবে তার রচনা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন ভাষায়। 

সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০১০ সালে একুশে পদক পান সেলিনা হোসেন। সে বছরই রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডি.লিট উপাধি দেয়।