কেন মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন পুতিন
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের সফরে ভারতে যাচ্ছেন, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং দুই দেশের যৌথভাবে আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেবেন।
বিবিসি বলছে, সফরকালে দিল্লি ও মস্কোর মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সফরটি এমন সময়ে হচ্ছে যখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে রুশ তেল কেনা বন্ধ করতে গত কয়েক মাস ধরে চাপ বাড়িয়েছে।
একইসঙ্গে সফরটি এমন সময়ে হচ্ছে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
দশকের পর দশক ধরে ভারত ও রাশিয়া ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং পুতিন ও মোদির মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে। কেন তাদের একে অপরকে প্রয়োজন এবং তাদের এই বৈঠক থেকে কী প্রত্যাশা করা যেতে পারে, তার একটি বিশ্লেষণ নিচে তুলে ধরা হলো।
বিশেষ বন্ধুত্ব, বাণিজ্য চুক্তি ও ভূ-রাজনীতি
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ক্রেমলিনের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?
শুরুতেই কিছু সংখ্যার দিকে নজর দিই:
. দেড়শো কোটির কাছাকাছি জনসংখ্যা।
. ৮ শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। ভারত বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতি।
এতে রুশ পণ্য ও সম্পদ—বিশেষ করে তেলের জন্য ভারত একটি আকর্ষণীয় বাজারে পরিণত হয়েছে।
ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারক এবং রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কিনছে। আগে পরিস্থিতি এমন ছিল না। ইউক্রেনে ক্রেমলিনের পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের আগে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি ছিল মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ।
মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইউরোপীয় বাজারে রাশিয়ার সীমিত প্রবেশাধিকারের সুযোগে ভারত রুশ তেলের মূল্যছাড়কে কাজে লাগায়। ফলে এই হার বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ শতাংশে।
ভারত এতে সন্তুষ্ট, ওয়াশিংটন ততটা নয়
গত অক্টোবর ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যুক্তি দেখায় যে রুশ তেল কিনে ভারত ক্রেমলিনের যুদ্ধ তহবিলে সহায়তা করছে। এরপর থেকেই রুশ তেলের প্রতি ভারতের চাহিদা কমে গেছে। তবে পুতিন হয়তো চাইবেন ভারত আবারও তেল কেনা অব্যাহত রাখুক।
মস্কোর জন্য ভারতের কাছে অস্ত্র বিক্রি আরেকটি বড় অগ্রাধিকার—এটি সোভিয়েত যুগ থেকেই চলে আসছে। পুতিনের সফরের আগে খবর এসেছে যে, ভারত অত্যাধুনিক রুশ যুদ্ধবিমান ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার পরিকল্পনা করছে।
শ্রমিক সংকটে ভুগতে থাকা রাশিয়া ভারতের দক্ষ জনশক্তিকেও এক মূল্যবান উৎস হিসেবে দেখছে।
তবে এখানেও ভূ-রাজনীতি বড় ভূমিকা রাখছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে—এটি দেখাতে বিশেষভাবে আগ্রহী ক্রেমলিন।
ভারতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে পুতিনের সাক্ষাতের বিষয়টি সেই প্রচেষ্টারই একটি অংশ।
চীন সফর করে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করাও একই কৌশলের অংশ, যেমনটি পুতিন তিন মাস আগে করেছিলেন। সে সফরেই তিনি মোদির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তিন নেতার হাসিমুখে আলাপচারিতার ছবি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, ইউক্রেন যুদ্ধ সত্ত্বেও মস্কোর শক্তিশালী মিত্র রয়েছে, যারা 'বহুমেরু বিশ্বের' ধারণাকে সমর্থন করে।
চীনের সঙ্গে নিজেদের 'সীমাহীন অংশীদারত্ব' নিয়ে রাশিয়া গর্ব করে।
ভারতের সঙ্গে 'বিশেষ ও সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারত্ব' নিয়েও তারা সমানভাবে সরব।
এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মস্কোর টানাপোড়েনপূর্ণ সম্পর্কের সম্পূর্ণ বিপরীত।
নোভায়া গাজেটার কলামিস্ট আন্দ্রেই কোলেসনিকভ বলেন, 'আমার মনে হয়—ক্রেমলিন নিশ্চিত যে, ইউরোপসহ পশ্চিমা বিশ্ব পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।'
'আমরা বিচ্ছিন্ন নই, কারণ আমাদের এশিয়া ও গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে এটাই ভবিষ্যৎ। সে অর্থে রাশিয়া আবারও বিশ্বের এই অঞ্চলে সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো প্রধান ভূমিকায় ফিরে এসেছে। তবে সোভিয়েত ইউনিয়নেরও যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। তাদের ছিল বহুমুখী পররাষ্ট্রনীতি', যোগ করেন তিনি।
আন্দ্রেই কোলেসনিকভ আরও বলেন, 'কিন্তু এখন আমরা ইউরোপ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। এটি নজিরবিহীন। আমাদের দার্শনিকরা সবসময় বলতেন, রাশিয়া ইউরোপেরই অংশ। এখন আমরা আর নই। এটি বড় ব্যর্থতা ও বড় ক্ষতি। আমি নিশ্চিত, রাশিয়ার রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী শ্রেণির একটি অংশ এখনো ইউরোপে ফিরে যাওয়া এবং শুধু চীন-ভারতের সঙ্গে নয়, ইউরোপের সঙ্গেও ব্যবসা করার স্বপ্ন দেখছে।'
যাই হোক, এই সপ্তাহে মস্কো-দিল্লির ঘনিষ্ঠতা, বাণিজ্য চুক্তি এবং বাড়তে থাকা অর্থনৈতিক সহযোগিতার কথাই বেশি শোনা যাবে।
মোদির কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের পরীক্ষা
মোদি ও ভারতের বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ে পুতিনের দিল্লি সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক সোভিয়েত যুগ থেকে চলে আসছে এবং বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির পরিবর্তন সত্ত্বেও তা স্থায়ী রয়েছে।
রাশিয়ার আগের যেকোনো নেতার তুলনায় পুতিন এই সম্পর্কে বেশি সময় ও শ্রম দিয়েছেন বলেই ধরে নেওয়া হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার সমালোচনা করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর তীব্র চাপ সত্ত্বেও মোদি বারবার বলেছেন যে, আলোচনাই এই সংঘাতের একমাত্র সমাধান।
এটিই ভারতের 'কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন', যেখানে মোদি এমন এক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানে ছিলেন, যেখানে তিনি মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রেখেছিলেন।
এটি কার্যকর ছিল, যতক্ষণ না ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরলেন। শুল্ক-সংক্রান্ত অচলাবস্থা সমাধান করতে ব্যর্থ হওয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এই প্রেক্ষাপটে ভারতের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন কতটা টিকে আছে, তা পরীক্ষা করবে পুতিনের এই সফর। যা মোদির জন্য আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাকে এখন কূটনৈতিকভাবে এক সরু দড়ির ওপর হাঁটার মতো পরিস্থিতি সামলাতে হবে।
মোদি চাইবেন দেশবাসী ও বিশ্বকে দেখাতে যে, পুতিন এখনো তার ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ট্রাম্পের চাপের কাছে তিনি নতি স্বীকার করেননি, যাকে তিনি আগে 'সত্যিকারের বন্ধু' বলে অভিহিত করেছিলেন।
কিন্তু ইউরোপের মিত্রদের চাপও তাকে সামলাতে হচ্ছে। এই সপ্তাহেই ভারতে নিযুক্ত জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতরা দেশটির একটি প্রধান পত্রিকায় যৌথভাবে একটি বিরল নিবন্ধ লিখে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার অবস্থানকে সমালোচনা করেছেন।
তাই মোদিকে নিশ্চিত করতে হবে যে, ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের উন্নতি যেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা ও ইউরোপের সঙ্গে তার অংশীদারিত্বকে ছাপিয়ে না যায়।
দিল্লি-ভিত্তিক থিংক-ট্যাঙ্ক গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) বলছে, 'ভারতের চ্যালেঞ্জ হলো কৌশলগত ভারসাম্য—ওয়াশিংটনের চাপ ও মস্কোর ওপর নির্ভরতার মাঝেও স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করা।'
ভারত-রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্ভাবনাকে উন্মোচন করাও মোদির আরেকটি বড় অগ্রাধিকার।
বিশ্লেষকেরা প্রায়ই বলেছেন যে, দুই শক্তিশালী মিত্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বহু দশক ধরে সম্ভাবনার তুলনায় কম ফল দিয়েছে।
২০২০ সালের মাত্র ৮ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২৫ সালের মার্চ শেষে তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দাঁড়ায় ৬৮ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। এর বড় অংশই এসেছে ছাড়কৃত দামে ভারতের বিপুল রুশ তেল কেনা থেকে। এতে বাণিজ্যের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে রাশিয়ার পক্ষে ঝুঁকেছে, যা মোদি ঠিক করতে চাইবেন।
ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ভারতীয় কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে রুশ তেল কেনা কমিয়ে দেওয়ায়, দুই দেশই এখন বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য অন্যান্য খাতের দিকে নজর দেবে।
প্রতিরক্ষা খাত সবচেয়ে সহজ বিকল্প। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে, ২০১০–২০১৫ সালে ভারতের রুশ অস্ত্র আমদানি ছিল ৭২ শতাংশ, ২০১৫–২০১৯ সালে ৫৫ শতাংশ, যা কমে ২০২০–২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশে।
এর প্রধান কারণ ছিল ভারতের প্রতিরক্ষা উৎস বৈচিত্র্যময় করা এবং দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর প্রচেষ্টা।
কিন্তু এই তথ্যগুলোর আরও গভীর বিশ্লেষণ অন্য চিত্র তুলে ধরে। ভারতের বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা প্ল্যাটফর্ম এখনো রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তাদের বিমানবাহিনীর ২৯টি স্কোয়াড্রনের বহু যুদ্ধবিমানই রুশ সুখোই-৩০।
এই বছরের মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সীমিত সশস্ত্র সংঘাত দেখিয়েছে যে, এস-৪০০-এর মতো রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেশটির জন্য কতটা অপরিহার্য। তবে এটি ভারতের জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করতে হবে এমন দুর্বলতাও প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভারত উন্নত এস-৫০০ ব্যবস্থা এবং সুখোই-৫৭ পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান কিনতে আগ্রহী। পাকিস্তান যে চীনা তৈরি জে-৩৫ পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ জেট সংগ্রহ করেছে, তা দিল্লির নজর এড়ায়নি। তাই ভারতও দ্রুত সমমানের জেট নিশ্চিত করতে চাইছে।
কিন্তু নিষেধাজ্ঞা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের ঘাটতিতে ভুগছে। এস-৪০০-এর কিছু ইউনিট হস্তান্তরের সময়সীমা পিছিয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে খবর রয়েছে। এ বিষয়ে পুতিনের কাছ থেকে নির্দিষ্ট নিশ্চয়তা চাইবেন মোদি।
বাণিজ্যের বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা দূর করতে মোদি চাইবেন রাশিয়ার বাজারে ভারতীয় পণ্যের জন্য আরও সুযোগ তৈরি হোক।
জিটিআরআই জানায়, ভোক্তামুখী ও দৃশ্যমান খাতে ভারতের উপস্থিতি এখনো খুবই সীমিত। স্মার্টফোন (৭৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার), চিংড়ি (৭৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন), মাংস (৬৩ মিলিয়ন) এবং পোশাক মাত্র ২০ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলারের বাজার। ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন সত্ত্বেও রুশ খুচরা বাজার ও ইলেকট্রনিকস সাপ্লাই চেইনে ভারতের প্রবেশ খুবই কম।
মোদি চান যুদ্ধ শেষ হলে এবং মস্কো বৈশ্বিক অর্থনীতিতে পুনরায় যুক্ত হলে রুশ বাজারে ভারতীয় পণ্যের অবস্থান শক্তিশালী করতে।
তিনি তেল ও প্রতিরক্ষার ওপর বাণিজ্যিক নির্ভরতা কমাতে চান, এমন একটি চুক্তির মাধ্যমে যা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করবে, আবার পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করারও সুযোগ রেখে দেবে।
জিটিআরআই আরও বলেছে, পুতিনের সফর কোনো শীতলযুদ্ধ যুগের নস্টালজিক পুনরাবৃত্তি নয়। এটি ঝুঁকি, সাপ্লাই চেইন এবং অর্থনৈতিক সুরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এক জটিল আলোচনা। সীমিত ফলাফল তেল ও প্রতিরক্ষাকে নিরাপদ করবে, উচ্চাভিলাষী ফলাফল আঞ্চলিক অর্থনীতি পুনর্গঠন করতে পারে।
