শিক্ষাবিদ সরদার ফজলুল করিমের আজ মৃত্যুদিন

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
15 June 2022, 07:15 AM
UPDATED 15 June 2022, 13:44 PM

শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সরদার ফজলুল করিমের আজ মৃত্যুদিন। ২০১৪ সালের আজকের দিনে ৮৯ বছর বয়সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

তার জন্ম ১৯২৫ সালের ১ মে বরিশালের আটিপাড়া গ্রামের কৃষক পরিবারে। মে দিবসে জন্ম নিয়ে শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির সংগ্রামেই নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বলা যায় তার সারাটা জীবন ছিল ত্যাগের। লেখায় চলায়, শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। একদিকে ব্রত ছিল জ্ঞানের আলো ছড়ানোর, অন্যদিকে সাধারণ শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার অবিরাম চেষ্টা করে গেছেন।  

বাবা খবিরউদ্দিন সরদার। মা সফুরা বেগম ছিলেন গৃহিণী। গ্রামে কাটেই তার শৈশব। প্রতিদিন সকালে পান্তা খেয়ে বাবাকে ফসলের মাঠে সাহায্য করতে লাঙ্গল নিয়ে ছুটতে হতো তাকে। তিনি নিজেই লিখেছিলেন, 'কৃষকের সন্তানের কোনো ভবিষ্যৎ নেই!' 

ম্যাট্রিকুলেশন শেষে প্রথম ঢাকা আসেন ১৯৪০ সালে। তারপর ভর্তি হন  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এইখান থেকে তিনি ১৯৪৫ সালে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স ও ১৯৪৬ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্ত্রে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

পরবর্তীতে তার সাম্যবাদী বামপন্থী সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত থাকার পর্যায়ে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিগৃহীত হন। রাজবন্দি হিসেবে ১১ বছর বিভিন্ন পর্যায়ে কারাজীবন কাটান। জেলে থাকা অবস্থাতেই ১৯৫৪ সালে তিনি পাকিস্তান সংবিধান সভার সদস্য হিসেবে কাজ করেন। পরে ১৯৬৩ থেকে `৭১ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেন।

১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাকিস্তান হানাদারবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন।

তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, 'চল্লিশের দশকে ঢাকা', 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক', 'রুমীর আম্মা' ইত্যাদি। প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য অনুবাদ গ্রন্থ, 'প্লেটোর রিপাবলিক', 'প্লেটোর সংলাপ', 'অ্যারিস্টটলের পলিটিকস' ইত্যাদি।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেন অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা।  এর মধ্যে রয়েছে ২০০১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের গুণীজন সম্মাননা,  ২০০০ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ও ২০০৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার।

নিজেই একদিন বলেছিলেন- 'মানুষের মৃত্যুদিন হচ্ছে তার সত্যিকারের জন্মদিন। কারণ জন্ম থেকে শুরু হওয়া সার্কিটটা সম্পূর্ণ হয় মৃত্যুতে এসে।'