তাইওয়ানের সেনাদের ‘গোপনে’ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন বিশেষ বাহিনী কয়েক মাস ধরে তাইওয়ানের সেনাদের 'গোপনে' প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রায় ২০টি বিশেষ অভিযান দল এবং প্রচলিত বাহিনীর ১টি দল গত এক বছর ধরে এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দ্বীপ মিত্রের বিরুদ্ধে চীনের ক্রমবর্ধমান হুমকির মধ্যে এই কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে এবং সেখানে বলা হয়েছে প্রশিক্ষণটি কমপক্ষে ১ বছর ধরে চলছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই প্রতিবেদন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। কিন্তু, পেন্টাগনের মুখপাত্র জন সাপল বলেছেন, সাধারণত, তাইওয়ানের সামরিক বাহিনীর প্রতি মার্কিন সমর্থন তাদের প্রতিরক্ষা চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ঠিক করা হয়।
সাপল এক বিবৃতিতে বলেন, তাইওয়ানের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে এবং চীনের বর্তমান হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বজায় থাকবে।
শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্ট নিয়ে মন্তব্য করতে বলা হলে তাইওয়ানের প্রধানমন্ত্রী সু সেং-চ্যাং বলেন, যে কোনো ন্যায়সঙ্গত বিষয়ে অনেকের সমর্থন থাকে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং জনগণকে রক্ষার পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি এবং সমমনোভাবাপন্ন দেশগুলোর একসঙ্গে কাজ করাকে প্রশংসা করি।
এর আগে, গত নভেম্বরে তাইওয়ানের নৌকমান্ডের উদ্ধৃতি দিয়ে তাইওয়ানের সংবাদবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, তাইওয়ানের নৌসেনা ও বিশেষ বাহিনীকে ছোট নৌকা ও উভচর অভিযানে প্রশিক্ষণ দিতে মার্কিন সেনারা সেখানে পৌঁছেছে।
কিন্তু, পরবর্তীতে মার্কিন ও তাইওয়ানের কর্মকর্তারা এই খবর অস্বীকার করেন। তারা জোর দিয়ে বলেছিলেন, উভয়পক্ষ কেবল দ্বিপাক্ষিক সামরিক বিনিময় এবং সহযোগিতার সঙ্গে জড়িত।
যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে বেইজিং তাইওয়ানকে একটি বিদ্রোহী প্রদেশ বলে মনে করে।
ব্যাংকক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর প্রকাশিত এবং তাইওয়ানের প্রচার মাধ্যমে প্রদর্শিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মার্কিন সেনারা 'ব্যালেন্স টেম্পার' দ্বীপে একটি মহড়ায় অংশ নিচ্ছেন।
চীনা বাহিনী গত এক বছরে তাইওয়ানের দিকে তাদের কার্যক্রম বাড়িয়েছে। তারা সমুদ্র আক্রমণের মহড়া পরিচালনা করেছে এবং তাইওয়ানের আকাশসীমার কাছাকাছি বোমারু বিমান এবং যুদ্ধ বিমান উড়িয়েছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বুধবার বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ১৫০টি চীনা যুদ্ধবিমান বিমান প্রতিরক্ষা অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে। এরপর থেকে তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা গত চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে।
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, 'সামান্য অসাবধানতা' বা 'ভুল গণনা' একটি বড় সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র নেড প্রাইস চীনের কার্যকলাপকে 'অস্থিতিশীল' এবং 'উস্কানিমূলক' বলে অভিহিত করেছেন।