উন্নত বিশ্বের বুস্টার ডোজের কারণে মহামারি শেষ না হওয়ার আশঙ্কা
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে ইতোমধ্যে বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে বিশ্বের কয়েকটি উন্নত রাষ্ট্র। অন্যদিকে অনুন্নত ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ভ্যাকসিনের অভাবে কোভিড-১৯ মহামারি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, উন্নত বিশ্ব নিজেদের লোকদের সুরক্ষা দিতে যে বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে, এতে করে মহামারি কখনই শেষ হবে না।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন বুস্টার ডোজ প্রদানের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে, তখন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ প্রথম ডোজের জন্য অপেক্ষা করছে।
সিএনএন'র প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আফ্রিকা ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় টিকা দেওয়ার হার কম হওয়ায়, এসব অঞ্চলে মহামারি জটিল আকার ধারণ করেছে। টিকা না দিলে মৃত্যু হার কমবে না এবং এসব লোকের দীর্ঘসময় বাড়িতে বসে থাকার মতো সামর্থ্য নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর আমেরিকায় ১০০ জন মানুষকে গড়ে ১০৮ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ইউরোপে ৮৮ ডোজ, এশিয়ায় ৮৮ ডোজ, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে ৬০ ডোজ, ওশেনিয়ায় ৩৮ ডোজ এবং আফ্রিকায় মাত্র ছয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা, মানবিক সহায়তা সংস্থা ও সংক্রামক বিশেষজ্ঞরা টিকার অতিরিক্ত ডোজ গরিব রাষ্ট্রগুলোকে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সবার জন্য টিকা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বুস্টার ডোজ প্রদানে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে, গত বুধবার গরিব দেশগুলোর জন্য টিকা নিশ্চিত করতে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করোনা টিকার বুস্টার ডোজ প্রয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থাটির প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস জানান, বুস্টার ডোজ স্থগিত রাখলে বিশ্বের প্রতিটি দেশের কমপক্ষে ১০ শতাংশ মানুষ টিকা পাবে।
তিনি আরও বলেন, 'আমি বুঝতে পারছি যে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে নিজের দেশের জনগণকে বাঁচাতে সব সরকার উদ্বিগ্ন। কিন্তু যারা ইতোমধ্যে টিকার বৈশ্বিক সরবরাহের অধিকাংশই ব্যবহার করেছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ব্যবহার করছে, আমরা সেসব দেশের এমন কাজ মেনে নিতে পারি না।'