যে কারণে ফেসবুকের নাম পরিবর্তন
প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সংকটের মধ্যে নাম পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুক ইনকরপোরেশন। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘোষণা দেন।
জাকারবার্গের ঘোষণা অনুযায়ী, ফেসবুকের আওতাধীন সব সেবা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন থেকে 'মেটা' নামে পরিচালিত হবে।
তবে, ফেসবুকের করপোরেট নাম পরিবর্তিত হয়ে 'মেটা' হলেও এর আওতাধীন সোশ্যাল অ্যাপ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ আগের নামেই থাকবে।
ফেসবুক কেন তাদের করপোরেট নাম পরিবর্তন করতে যাচ্ছে- তার কয়েকটি কারণ ব্যাখ্যা করেছে কানাডাভিত্তিক প্রযুক্তিবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট।
গত ২৭ অক্টোবর ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টে প্রকাশিত 'সেয়িং বাই টু ফেসবুক: হোয়াই কোম্পানিজ চেঞ্জ দেয়ার নেম' শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নাম পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হচ্ছে ব্র্যান্ডটির কেলেঙ্কারি ও নেতিবাচক প্রভাব। যার সঙ্গে রয়েছে স্বয়ং জাকারবার্গের সম্পৃক্ততা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এমনকি সাম্প্রতিক বিভ্রাট ও হুইসেল ব্লোয়িং কেলেঙ্কারির আগে থেকেই ফেসবুক এই সময়ের সবচেয়ে কম বিশ্বস্ত প্রযুক্তি সংস্থা ছিল। মার্ক জাকারবার্গ একসময় সিলিকন ভ্যালির সবচেয়ে প্রশংসিত সিইও ছিলেন। কিন্তু, এসব ঘটনার পর থেকে তার প্রভাব কমেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ফেসবুকের নাম পরিবর্তন নিয়ে এসব নেতিবাচক বিষয়গুলো চিহ্নিত করা সহজ হলেও এই পরিবর্তনের পেছনে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় জড়িত আছে। যেমন- ফেসবুক স্বীকার করেছে যে গোপনীয়তার সমস্যাগুলো তাদের আয়ের প্রাথমিক উৎসকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। এছাড়া, ব্যবহারকারীদের ডেটার ওপর নির্মিত কোম্পানির বিজ্ঞাপন-চালিত মডেলটি প্রতি বছর ক্রমবর্ধমানভাবে তদন্তের আওতায় আসছে।
পাশাপাশি, মেটাভার্স হাইপের পেছনেও কিছু কারণ আছে। ফেসবুক প্রথম তাদের উচ্চাকাঙ্খার আগ্রহ দেখায় ২০১৪ সালে। তখন বিষয়টি অধিগ্রহণ করে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট নির্মাতা অকুলাস। কোম্পানির কর্মীদের একটি বড় অংশ ইতোমধ্যে মেটাভার্স ধারণাকে বাস্তবে পরিণত করতে কাজ করছে। একইসঙ্গে পরবর্তী ৫ বছরে ইউরোপে আরও ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা আছে তাদের।
ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকের নতুন এই নীতি ফলপ্রসূ হয় কিনা, তা এখন দেখার বিষয়। তবে, ভবিষ্যতে জাকারবার্গসহ ফেসবুকের বিনিয়োগকারীরা নতুন 'মেটা' নামের প্রতি মিডিয়া ও জনগণের প্রতিক্রিয়া এবং এই পরিবর্তন কীভাবে কাজ করে সেদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখবে। যেহেতু, প্রতিষ্ঠানটির কোটি কোটি ডলার এখন ঝুঁকিতে আছে।