দৈনন্দিন জীবন সহজ করতে ৫ স্মার্ট অ্যাপ

আসরিফা সুলতানা রিয়া
আসরিফা সুলতানা রিয়া
18 February 2022, 08:42 AM
UPDATED 18 February 2022, 14:59 PM

হাতে একটা স্মার্টফোন থাকলেই সেটা থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়া সম্ভব হয় না। তার জন্য জানা থাকতে হয় ব্যবহার বিধি ও প্রয়োজনীয় অ্যাপ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা। তাহলে অ্যাপগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনকে আরও বেশি সহজ ও সময় সাশ্রয়ী করা সম্ভব হয়। ২০২২ সালে এরকম কিছু অ্যাপ জায়গা করে নিতে পারে আপনার প্রিয় অ্যান্ড্রোয়েড ফোনে। যা আপনার নিত্যদিনের কাজকে করবে সহজ ও সময় সাশ্রয়ী।   

273471868_470683924464217_2656063110164594048_n.jpg
ছবি: সংগৃহীত

টুইক 

টু ডু লিস্ট ব্যবহারে, কাজ হবে সহজে  

সপ্তাহের শুরুতে ক্যালেন্ডারে দাগ কেটে প্রতিদিনের কর্মতালিকা লিখে রাখার অভ্যাস ফুরিয়েছে অনেক আগে। অনেকেই এখন ব্যবহার করেন ডায়েরি, ছোট নোটপ্যাড কিংবা মোবাইল ফোনের টু ডু লিস্ট। টুইক ঠিক তেমনই একটি স্মার্ট অ্যাপ। হাল আমলের ক্যালেন্ডারের আধুনিক ফিচারের অপশনগুলো টুইকের বিশেষ আকর্ষণ। এই অ্যাপে ব্যক্তিগত রুটিনের পাশাপাশি পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীদের সঙ্গে শেয়ার করা যাবে দলীয় কাজের পরিকল্পনাসূচি। সেট করা যাবে রিমাইন্ডার, তৈরি করা যাবে নোট এবং চেকলিস্ট। টুইকে তারিখ বাছাই করে সময়ানুযায়ী কাজগুলো লিখে রাখার ক্ষেত্রে দৃষ্টিনন্দন নানা রঙে সেট করা যাবে টাস্কগুলো এবং সম্পাদন শেষে কেটে দেওয়া যাবে সুবিধার জন্য। যার ফলে সহজেই বোঝা যাবে, কী কী কাজ আপনি সময়মত শেষ করতে পেরেছেন আর কোনগুলো অবশিষ্ট আছে। চাইলে প্রিন্ট করা যাবে যাবতীয় কাজের পরিকল্পনা। টুইক ব্যবহারে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট করা যাবে আরও সহজে এবং পোমোডোরো, গেটিং থিংস ডান, ক্যানবান, ইট দ্য ফ্রগের মতো প্রোডাক্টিভ মেথডের সমন্বয়ে দৈনন্দিন ভারী ভারী কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে স্বল্পসময়ে। এক কথায়, কাগজ-কলমের আধুনিক রূপে টুইক কাজ করে দারুন উপায়ে। 

273517255_683605389480369_6986613843021696546_n_1.png
ছবি: সংগৃহীত

লিস্টি
রাখুন সব এখানে, খুঁজে পাবেন সময়ে   

প্রতিদিন মোবাইল ফোনে কাজ করা হয় কত, এক ক্লিকেই সব সহজ হতো লিস্টির কার্যকারিতা জানা যদি থাকতো। সাধারণত আপনি স্মার্টফোনে কথা বলা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার, ছবি তোলা ছাড়া আর কী কী কাজে ব্যবহার করেন? মুভি, টিভি শো দেখা থেকে শুরু করে গেইম খেলা, বই এবং পত্রিকা পড়াসহ অনেক কিছু পকেটে থাকা মোবাইল ফোনে করেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু প্রয়োজনের সময় হাতের কাছে কোনো কিছু খুঁজে না পেয়ে বিরক্ত হননি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। কেমন হয়, যদি এক অ্যাপেই সবকিছু ভিন্ন ভিন্ন অপশনে সেইভ করে রাখা যায়? লিস্টির কারসাজি ঠিক এখানেই। হতে পারে, হঠাৎ করেই একটি বই পড়তে বা মুভি দেখতে ইচ্ছা হলো কিন্তু কাজের চাপে সময় মিলছে না। এদিকে ভুলে যাওয়ার বাতিক রয়েছে ভীষণ। চিন্তা নেই, লিংক কপি করে লিস্টিতে সেইভ করুন, সুযোগ পেলেই উপভোগ করুন। লিস্টির ইন্টারফেসে মুভি, টিভি শো, বই, গেইম, ছবির লিংক সুবিধামতো স্টোর করে রাখার অপশনের পাশাপাশি আছে ডিফল্ট প্রাইভেসির সুবিধা। এছাড়া থার্ড পার্টির কাছে ব্যবহারকারীর তথ্য প্রেরণে বিরত থাকায় অঙ্গীকারাবদ্ধ লিস্টিতে খুব শিগগিরই যোগ হতে যাচ্ছে আরও আকর্ষণীয় কিছু ফিচার এবং ক্যাটাগরি। 

272221167_1089410104959841_7362713589505910512_n.png
ছবি: সংগৃহীত

             
মিন্ট
ভুলে যান যদিও, অর্থ সাশ্রয় হবে তবুও

আয় করছেন ঠিকই কিন্তু কোথায় কত খরচ হচ্ছে কিংবা সঞ্চয় করার মনোভাব থাকলেও খরচ দিন দিন বেড়েই চলেছে? তাহলে মিন্ট অ্যাপ আপনার জন্য অত্যাবশ্যক। সহজ কথায়, বাজেট এবং খরচের সমন্বয় করতে ইনটুইটের মিন্ট অ্যাপের জুড়ি মেলা ভার। মিন্ট মূলত ফ্রি সেবাদানকারী একটি বাজেটিং অ্যাপ, যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের একাধিক ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট ডিজিটালি ম্যানেজ করতে পারে। বাজেট ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেনের হিসাব রাখার জন্য খরচ এবং সঞ্চয় খাতগুলো ট্র্যাক করে মিন্ট। একজন ব্যবহারকারীর ব্যাংক একাউন্ট, অর্থ ব্যবস্থাপনা একাউন্ট, অবসরকালীন এবং বিনিয়োগকৃত একাউন্ট, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডসহ সকল প্রকার আর্থিক লেনদেনের তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে খুঁজে পাওয়া যায় এর মাধ্যমে। এমনকি কোন বিল দেওয়া বাকি, কোন সাবস্ক্রিপশনের মেয়াদ শেষ, বাজেটের অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে কি না, কোন খাতে খরচের পরিমাণ কমাতে হবে ইত্যাদির আপডেট দিতে সক্ষম জনপ্রিয় মিন্ট অ্যাপ। নিরাপত্তার দিক বিবেচনায়ও মিন্ট অ্যাপ বেশ সতর্কতা অবলম্বন করে, গ্রাহকদের তথ্যাদি অন্যত্র স্থানান্তরে বেশ নারাজ এটি। ব্যবহারকারী চাইলে তার আর্থিক একাউন্টগুলো সরাসরি মিন্ট অ্যাপে সংযোগ না রাখতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে তথ্য হালনাগাদ করতে মিন্ট অ্যাপ কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না, একাধিক একাউন্ট থাকা সাপেক্ষে ব্যবহারকারীকে ম্যানুয়ালি সবকিছু পর্যায়ক্রমে তথ্য প্রদানে অবশ্য বেগ পেতে হবে।   

273248725_3272766609668423_702479892585636696_n.jpg
ছবি: সংগৃহীত

সেভেন 

৭ মিনিটে ব্যায়াম সারুন, শরীর-মন ফুরফুরে রাখুন 

শরীর সুস্থ রাখতে চান, কিন্তু ব্যায়াম করার কথা ভাবলেই আলসেমি ভর করে এমন মানুষের সংখ্যা নেহাৎ কম নয়। অনেক সময় চাইলেও কর্মব্যস্ততায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরচর্চা করার ফুরসত কিংবা শক্তি কোনোটাই থাকে না। তাদের জন্য সেভেন হতে পারে একটি অসাধারণ স্মার্ট ফিটনেস অ্যাপ। যার মাধ্যমে অবসরের মাত্র ৭ মিনিটে সেরে ফেলা যাবে একদিনের পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্কআউট। হাই-ইন্টেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং (এইচআইআইটি) ব্যবহৃত এই অ্যাপে অল্প সময়ে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়া যাবে। অ্যাপটি উল্লিখিত পদ্ধতিতে কোনো প্রকার সরঞ্জাম ব্যবহার ব্যতীত প্রথমে ১০ সেকেন্ড ব্যায়াম এবং পরের ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম দিয়ে মোট ১২টি ব্যায়াম করায়। ব্যবহারকারীর চাহিদা মোতাবেক শরীরের অঙ্গভেদে আলাদা আলাদা ব্যায়াম করার অপশন বিদ্যমান সেভেন অ্যাপে। শুধু তাই নয়, শারীরিক ব্যায়ামের নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে অ্যাপে যথাযথ দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়। প্রায় ২০০টির মতো অপশন সম্বলিত ফিটনেস অ্যাপটি বেশ সুবিধার বলা চলে। তবে ফ্রি ট্রায়ালে খুব একটা অপশন না থাকায়, সর্বাধিক উপকারিতা পাওয়ার জন্য প্রিমিয়াম ভার্সনটি ব্যবহার করতে হবে। মাসিক ৯ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার বা ৫৯ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার ব্যয় হবে প্রতি বছরে। তার আগে কৌতূহল কিংবা প্রয়োজনীয়তা যাচাই করতে সেভেনের ৭ দিনের ফ্রি ট্রায়াল উপভোগের জন্য সাইন আপ করুন আজই। 

268712271_661385731533427_3951596314116464415_n.jpg
ছবি: সংগৃহীত

ইয়ামলি

চটজলদি রান্না হবে, প্রশংসাও করবে সবাই
 
কথায় আছে, খাবারের উত্তম পরিকল্পনাই হলো ভালো রান্নার চাবিকাঠি। কিন্তু এখানেই শুরু হয় সব ঝামেলা। দৈনন্দিন তিন বেলা খাবারে কিংবা ছুটির দিনের স্পেশাল মেনুতে কী রান্না করবেন ভেবেই সময় পার করে ফেলেন অনেকটা। তাছাড়া খাবার কেমন হয়েছে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা তো আছেই। ভেবে দেখুন তো, যদি একটি অ্যাপেই পাওয়া যায় দেশি-বিদেশি নানা ধরনের রান্নার রেসিপি তাহলে কেমন হয়? ইয়ামলি ঠিক সেরকমই একটি নাম, যে অ্যাপ ব্যবহারে কমবে রান্নার যত ঝক্কি-ঝামেলা। ইয়ামলি নামক অ্যাপটি খাদ্যের স্বাদ, রুচি, পুষ্টিগুণ, উপকরণ এবং ব্যবহারকারীর পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে ডায়েট চার্ট অনুসরন করে ভিন্ন ভিন্ন মুখরোচক রেসিপি অফার করতে পারে। কোন দিন কী রান্না করবেন সেই চিন্তা নিরসনেরও উপায় রেখেছে ইয়ামলি। অ্যাপের অপশনে ক্লিক করা মাত্রই সপ্তাহের দিনগুলো বিবেচনা করে কেনাকাটার তালিকাও প্রস্তুত করে দেয় ইয়ামলি। কিংবা রাতে অফিস শেষে বাড়িতে ফিরতেই যদি দেখেন মেহমান এসে হাজির, পড়ে যান আরেক বিপাকে। বাজার করা হয়নি, ফ্রিজেও তেমন কিছু নেই দেখতেই যদি হতভম্ব হয়ে যান, ইয়ামলি অ্যাপকে স্মরণ করতে পারেন। আপনার ফ্রিজে থাকা সীমিত উপকরণ দিয়ে নতুন ধাঁচের খাবার রান্নার রেসিপি প্রদান করতে ইয়ামলি বিন্দুমাত্র দেরি করবে না। আর কী চাই? স্মার্ট রাধুনী হতে আজই ডাউনলোড করুন মাস্টার শেফের জ্ঞান এবং গুণসমৃদ্ধ ইয়ামলি অ্যাপ।