বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, ৪০ বছর পর অবমুক্ত চিঙ্গড়িয়া খাল

By নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী
7 April 2022, 10:27 AM

অবশেষে আন্ধারমানিক নদীর সঙ্গে মিশলো পটুয়াখালীর চিঙ্গড়িয়া খাল। খালের ৪টি বাঁধ কেটে দিয়ে ৪০ বছর পর খালটি অবমুক্ত করল উপজেলা প্রশাসন। খালটির পানি প্রবাহ সচল হওয়ায় স্বস্তি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।

গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে শুরু হওয়া এ অভিযান শেষ হয় সন্ধ্যায়। এসসময় উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাকিবুল আহসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক, পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে কলাপাড়া শহরের এক ব্যক্তিকে ভূমি অফিসের কিছু কর্মকর্তা প্রায় দু কিলোমিটার দীর্ঘ চিঙ্গড়িয়া খালটি চাষযোগ্য কৃষিজমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত দেয়। সর্বশেষ বাংলাদেশ সার্ভে জরিপেও খালকে ব্যক্তিগত নাল জমি দেখায়। পরে বাঁধ নির্মার্ণের ফলে প্রবাহমান খালটিতে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে বর্ষায় জলাবদ্ধতার কবলে পড়া এবং শুকনো মৌসুমে পঁচা দুর্গন্ধে বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

তারা বলেন, বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। গত ৩ মার্চ কলাপাড়া শহীদ সুরেন্দ্র মোহন চৌধুরী সড়কে খালটি উদ্ধারে মানববন্ধন করে টিয়াখালী ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক। তারপরই উপজেলা প্রশাসন খালটি উদ্ধারে নামে।

পৌর শহরের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা টিপ মৃধা জানান, প্রায় ৪০ বছর ধরে এ খালটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিল ভূমিদস্যুরা। খালটি কলাপাড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত এবং আন্ধারমানিক নদীর সাথে সংযুক্ত। কিন্তু ভূমিদস্যুদের দখলের কারণে খালটি প্রায় মৃত। তবে খালটি উদ্ধার হওয়ায় আমরা স্বস্তি প্রকাশ করেছি।

একই এলাকার বাসিন্দা কবির মৃধা জানান, খালটি বন্ধ থাকায় মশার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল। খালটি অবমুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মশার অভয়াশ্রমও ধ্বংস হলো।

নাগরিক উদ্যোগ কলাপাড়ার আহ্বায়ক নাসির তালুকদার জানান, এখানে দখলদাররা বাঁধ দিয়ে খালে মাছ চাষ করতো। খালটির দখলমুক্ত করার মধ্য দিয়ে এই এলাকার মানুষের জলাবদ্ধতা দূর হলো। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো।

কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রাকিবুল আহসান বলেন, প্রায় ৪০ বছর পর খালটি অবমুক্ত হলো। এ খালটি সংস্কারের মাধ্যমে জোয়ার ভাটার প্রবাহমান পানি চলাচলের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে আর যাতে কেউ এই খাল বন্দোবস্ত না নিতে পারে সে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। আশা করছি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, খালটিতে এখনও কিছু অবকাঠামো আছে তা অপসারণের মাধ্যমে পুরোপুরি উদ্ধার করা হবে। পর্যায়ক্রমে এই উপজেলার সব খাল দখলমুক্ত হবে।